খ্রিস্টান ধর্মাম্বলীদের অন্যতম বড় উৎসব 'ক্রিসমাস' বা 'বড়দিন'। বড়দিন হলো যিশুর জন্মদিন। রোমানদের তথ্য অনুসারে, বেথলেহেম শহরে এই দিনেই মেরির কোলে জন্ম হয় যিশুর। সেই থেকেই দিনটিকে 'বড়দিন' হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়।
২৫ ডিসেম্বরের এই দিনটিকে কেন বড়দিন দিন বলা হয়, তা কি জানেন? গ্রিক বর্ণমালা এবং একাডেমির বাংলা অভিধানে 'বড়দিন'-এর অর্থ পাওয়া যায়। এছাড়াও দিনটির ইতিহাস সম্পর্কে জানাতে কোথাও কোথাও এর ভৌগলিক ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়েছে।
সেই তথ্য অনুসারে, যিশুখ্রিস্টের জন্মমাস বলেই পুরো মাসকে 'খ্রিস্টমাস' বলা হয়। সেখান থেকেই এসেছে খ্রিস্টের মাস। ১০৩৮ সালের রচিত একটি বই থেকে জানা যায়, মধ্যযুগীয় সময়ের ইংরেজি Christemasse বা Cristes mæsse শব্দ থেকে এসেছে 'খ্রিস্টমাস'। এই "Cristes" শব্দটি এসেছে গ্রিক Christos এবং "mæsse" শব্দটি লাতিন missa থেকে। গ্রিক ভাষায় এক্স কথাটির অর্থ হলো Christ। তাই খ্রিস্টের সংক্ষিপ্ত শব্দ হিসেবে এই 'X-Mas' কথাটি বলা হয়।
এই দিনটিকে 'বড়দিন' আখ্যা দেওয়ার পেছনে ভৌগলিক ব্যাখ্যাও রয়েছে। উত্তর গোলার্ধের দক্ষিণ অয়নান্ত দিবসেও দেখা হয়। অর্থাৎ ২৩ ডিসেম্বর থেকে দিন বড় হতে থাকে, অন্যদিকে রাত হতে থাকে ছোট। তাই ২৫ ডিসেম্বরকে 'বড়দিন' বলে আখ্যা দেন দার্শনিকরা।
দার্শনিকদের মতে, মর্যাদার দিক থেকে এটি একটি 'বড়দিন'। তাই এই নামকরণে যুক্তিও রয়েছে।
“The Origins of Christmas” বই থেকে জানা যায়, ২৫ ডিসেম্বরকে 'বড়দিন' হিসাবে পালন করার প্রথা শুরু করেন রোমানরা। রোমান রাজা অরেলিয়ান এই দিনে মহাসমারোহে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন শুরু করেন। বিশ্বজুড়ে তাই ২৫ ডিসেম্বরকেই 'বড়দিন' হিসেবে পালিত হয়।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে 'বড়দিন' একই দিনে পালন হলেও রাশিয়া, জর্জিয়া, মিশর, আর্মেনিয়া, ইউক্রেন ও সার্বিয়ার মতো কয়েকটি দেশে এই উৎসব হয় ৭ জানুয়ারি। জুলিয়ান বা জর্জিয়ান ক্যালেন্ডারের হিসাব মেনেই এসব দেশে উৎসবটি পালিত হয়। শুধু তাই হয়, আর্মেনিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারীরা ৬ জানুয়ারি 'বড়দিন' পালন করেন।
'বড়দিন' পালন নিয়ে তাই অনেক মতবেদ রয়েছে। স্থান-কাল-পাত্রভেদে নানা মতভেদের থাকলেও ২৫ ডিসেম্বরেই উৎসবটি মহাসমারোহে পালিত হয় বিশ্বজুড়ে। এই দিনেই আনন্দ, উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেন সবাই।
সূত্র; দ্য স্টার